৩০ বছরের মেসি বলেন, প্রায় ১৭ বছর ১৪৪ দিন টানা পরিশ্রমের পর আমি এখনকার অবস্থানে এসেছি।
শচীনের প্র্যাক্টিসের দৈর্ঘ্য ছিলো দৈনিক প্রায় ১০ ঘন্টা। ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের অনেক সিনিয়র খেলোয়াড় হয়ে যাবার পরও তাকে প্র্যাক্টিস নেটে সবার আগে উপস্থিত দেখা যেত।
messi practice: bdlifechart
ডেভিড বেকহ্যামকে আমারা অনেকেই চিনি, কিন্তু আপনি কি জানেন, ডেভিড বেকহ্যাম তাঁর কলেজ জীবনে একটা দিনও বন্ধুদের সাথে পার্টিতে যান নি।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো প্রতিদিন ৪ ঘন্টা ফ্যাট লেভেল ঠিক রাখার জন্য এক্সারসাইজ, এর পাশাপাশি ৩০ মিনিট করে আট ধরণের রানিং সেশন, লং রেঞ্জের ফ্রি কিক প্র্যাক্টিস এবং আরও অনেক ধরণের মাসল ট্রেনিং নেন।
মাইকেল জর্ডান, ছয়বার এনবিএ বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়ন, ৭০ এরও অধিক ম্যাচে ম্যাচ সেরার খেতাব বিজয়ী, যার কি না উচ্চতা কম থাকায় জাম্পে সমস্যা ছিলো। তিনি গ্রীষ্মের ছুটিতে যখন তার বন্ধুরা বেড়াতে যেতেন তখন প্রতি দিন একশ বার করে বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে জাম্পের প্র্যাক্টিস করতেন।
বিল গেটস তার কোম্পানি শুরুর প্রথম ৫ বছরে একটা দিনও ছুটি নেন নি, পরের ২ বছরে মোট ছুটি নিয়েছিলেন মাত্র ২ সপ্তাহ। মার্ক কিউবান প্রথম ৭ বছরে একদিনও ছুটি নেননি।
অ্যাপলের সিইও টিম কুকের দিন শুরু হয় ভোর ৪ঃ৩০-এ। একটু শরীর চর্চার পরই বসে যান গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল্গুলো নিয়ে।
সেরেনা উইলিয়ামস আর ভেনাস উইলিয়ামসের বয়স যখন থেকে ৭ বছর তখন থেকেই তারা প্রতিদিন ভোর ছয়টায় উঠে প্র্যাক্টিস শুরু করতেন।
ইয়াহুর সিইও মেরিসা মায়ের প্রতি সপ্তাহে ১৩০ ঘন্টা করে কাজ করেন।
পেপসির সিইও ইন্দ্র নয়ি (যাকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নারী সিইও হিসেবে বিবেচনা করা হয়) ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের পাশাপাশি হোটেলে রাতব্যাপী রিসেপশনিস্টের জব করতেন । তিনি এখনও ভোর ৭ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পেপসির অফিসে কাজ করেন।
টমাস আল্ভা এডিসনের ঘুমের সময় ছিলো মাত্র চার ঘন্টা। বাকী প্রায় পুরোটা সময়ই গবেষনা করতেন।
মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, 'আমি হয়তো আমার দিনের তিন ভাগের এক ভাগ সময় ফেসবুক অফিসে থাকি, কিন্তু এর বাইরের প্রতিটা মুহুর্তেই আমার চিন্তা চলতে থাকে, কীভাবে আমি ফেসবুককে আরও বড় করবো'।
ফেসবুকের COO শেরিল স্যান্ডবার্গ প্রতিদিন বিকেল ৫ঃ৩০ এ অফিস শেষ করে তার পরিবারের সাথে ডিনার করেন। তারপর পরিবারকে একটু সময় দিয়ে, সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে, আবার ফেসবুক অফিসে প্ল্যানিং টিমের সাথে কাজ করেন।
টিভি উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রে বলেন, আমি দিনের আলো খুব কম দেখি। কারণ আমি এখনও ভোর ৫টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত কাজ করি। "
কেও অনেক বড় কিছু করলে আমরা ২টা কাজ করি, হয় আমরা খোঁজার চেষ্টা করি, তারা কী কী সুযোগ, সুবিধা আর সহযোগিতা পেয়েছিলেন, কিংবা আমরা তাদেরকে ব্যতিক্রমের খাতে ফেলে দেই। কিন্তু আমরা কখনই স্বীকার করতে চাই না যে তারা পরিশ্রমের সুবাদের ফলাফলগুলো পেয়েছেন।
আমরা আমাদের অলসতার মানসিকতাকে ঢেকে দিতে চাই 'সুযোগ ছিলো না', 'সহযোগিতা ছিলো না', 'সময় ছিলো না', 'টাকা ছিলো না', 'মামা ছিলো না' এই অজুহাতগুলো দিয়ে। আমার চারপাশে দেখা অধিকাংশ 'কম দক্ষ' আর সন্তোষজনক অবস্থানে পৌঁছাতে না পারা মানুষেগুলো আসলে ব্যর্থ কিংবা দুর্ভাগা নন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা হয় 'অলস', নয় তাদের 'ফোকাস' কম।
তাহলে এই ফোকাসগুলোকে কীভাবে বাড়ানো যায়, দিনের পর দিন কীভাবে নিজের স্বপ্নের জন্য কাজ করা যায়, কীভাবে পরিশ্রম করলে আমাদের জন্য স্বপ্নপূরণ সহজ হবে, সর্বোপরি, 'নিজের ক্রমাগত ব্যর্থতা আর সংগ্রামগুলোকে কীভাবে এনজয় করা যায়?'- তা নিয়ে একটা চ্যাপ্টারই আছে 'বর্ণ প্রকাশ' থেকে সামনের একুশে বই মেলায় বের হতে যাওয়া আমার বই 'লাইফ ইজ ভেরি ইজি'-তে।
No comments:
Post a Comment